নতুন জন্ম নিবন্ধন আবেদন বা জন্ম নিবন্ধন অনলাইন আবেদন করার জন্য বয়স ভেদে ২৫ থেকে ৫০ টাকা ফি প্রদান করতে হয়। ]
তবে যদি কোন শিশুর জন্ম নিবন্ধন অনলাইন আবেদন জন্ম থেকে ৪৫ দিনের মধ্যে করা হয় তাহলে এর জন্য কোন প্রকার ফি প্রযোজ্য হবে না।
জন্ম নিবন্ধন অনলাইন আবেদন করার জন্য ওয়েবসাইটে গিয়ে আবেদন ফরম পূরণ করতে হবে। আবেদন ফরম পূরণ করা হয়ে গেলে প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস আপলোড করে জন্ম নিবন্ধন অনলাইন আবেদন সম্পন্ন করতে হবে।
জন্ম নিবন্ধন অনলাইন আবেদন সম্পর্কে প্রয়োজনীয় এবং গুরুত্বপূর্ণ সেই সাথে বিস্তারিত তথ্য নিয়ে হাজির হয়েছে আজকের এই আলোচনায়।
আজকের আলোচনা ফলো করলে আশা করি আপনার জন্ম নিবন্ধন অনলাইন আবেদন সংক্রান্ত সমস্ত প্রশ্নের অবসান ঘটবে।
নতুন জন্ম নিবন্ধন আবেদন
জন্ম নিবন্ধন হচ্ছে যে কোন শিশু বা নাগরিকের জন্ম সংক্রান্ত একটি প্রমাণ পত্র যেটি শিশুর জন্মের পরে নিকটস্থ কার্যালয়ে গিয়ে অথবা অনলাইনে নিবন্ধন করে নিতে হয়। প্রায় সকল ক্ষেত্রেই জন্ম নিবন্ধনের এই অনলাইন সার্টিফিকেট প্রয়োজন হয়ে থাকে।
কিছুদিন আগেও জন্ম নিবন্ধন হাতে লিখে সেগুলো নথিতে সংরক্ষণ করে রাখা হতো। কিন্তু বর্তমানে জন্ম নিবন্ধন অনলাইনে সম্পন্ন করা হয় এবং এগুলো অনলাইনের ডাটাবেজে সেভ করে রাখা হয়।
জন্ম সনদ দরকার?
একটি শিশুর জন্মের পর থেকেই তার জন্ম নিবন্ধন সার্টিফিকেটটি প্রয়োজন হয়ে থাকে। যেকোনো সরকারি সাহায্য বা সহযোগিতা পাওয়ার জন্য অথবা স্কুল কলেজে ভর্তি হওয়ার জন্য জন্ম নিবন্ধন প্রয়োজন হয়।
এছাড়াও জাতীয় পরিচয় পত্র আবেদন করার ক্ষেত্রে জন্ম নিবন্ধন অবশ্যই প্রয়োজন হবে। এছাড়াও জাতীয় পরিচয়পত্রের যে প্রয়োজনগুলো রয়েছে, জাতীয় পরিচয় পত্র না হওয়া পর্যন্ত সেই প্রয়োজনগুলো সারানোর জন্য জন্ম নিবন্ধন সার্টিফিকেট ব্যবহার করা হয়।
এছাড়াও জন্ম নিবন্ধনের আরো অনেক কাজ রয়েছে।
জন্ম নিবন্ধন আবেদন করার সঠিক সময় কখন?
জন্ম নিবন্ধন অনলাইন আবেদন করার সঠিক সময় হচ্ছে শিশুর জন্মের পর ৪৫ দিন বয়স পর্যন্ত। কারণ এই সময়টাকে জন্ম নিবন্ধন সব থেকে সহজ এবং এতে কোনো ফি প্রযোজ্য হয় না।
জন্মের পর থেকে ৪৫ দিনের মধ্যে জন্ম নিবন্ধন করার ক্ষেত্রে বেশি কিছু কাগজপত্র প্রয়োজন হবে না।
তবে জন্মের পর থেকে ৪৫ দিন বয়সের মধ্যে যদি জন্ম নিবন্ধন করতে অপারগ হযন তাহলে সেটি অবশ্যই পাঁচ বছরের মধ্যে করে নিতে হবে।
তবে সমস্যা হলে জন্ম নিবন্ধন পাঁচ বছরের পরেও করা যায় তবে এর জন্য কিছু কিছু ক্ষেত্রে ঝামেলা বহন করতে হয়। এজন্য জন্ম নিবন্ধন করার সঠিক সময় হচ্ছে জন্মের পর থেকে ৪৫ বছর বয়স পর্যন্ত।
নতুন জন্ম নিবন্ধন আবেদন করতে কি কি লাগে
জন্ম নিবন্ধন অনলাইন আবেদন করার ক্ষেত্রে কিছু ডকুমেন্টস উপস্থাপন করতে হবে। তবে এই সকল ডকুমেন্টস গুলো হবে বয়স ভেদে অর্থাৎ জন্মের পর থেকে ৪৫ দিনের মধ্যে জন্ম নিবন্ধন করার জন্য যে সকল ডকুমেন্টসগুলো প্রয়োজন হবে।
জন্ম নিবন্ধন যদি দেরিতে করা হয় সে ক্ষেত্রে আরো অতিরিক্ত ডকুমেন্টসের প্রয়োজন হবে। নিচে বয়স ভেদে জন্ম নিবন্ধন করতে কোন কোন কাগজপত্র গুলো প্রয়োজন হয় সেগুলো উল্লেখ করা হলো।
জন্মের পর থেকে ৪৫ দিন বয়স পর্যন্ত
জন্মের পর থেকে ৪৫ দিন বয়স পর্যন্ত এই সময়ের মধ্যে জন্ম নিবন্ধন করতে যেই যেই ডকুমেন্টগুলো প্রয়োজন হবে সেগুলো হচ্ছে-
- ইপিআই টীকা কার্ড এর ফটোকপি বা হাসপাতালের ছাড়পত্রের ফটোকপি
- ঠিকানা প্রমাণের জন্য বাসার হোল্ডিং নম্বর অথবা হোল্ডিং ট্যাক্সের রশিদ
- পিতা মাতার জন্ম নিবন্ধন নাম্বার এবং জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি এ
- মোবাইল নাম্বার
৪৫ দিন পর থেকে ৫ বছর পর্যন্ত
শিশুর বয়স যদি ৪৫ দিন পর থেকে পাঁচ বছর পর্যন্ত হয় এবং এই সময়ের মধ্যে যদি জন্ম নিবন্ধন অনলাইন আবেদন করতে চায় তাহলে এক্ষেত্রে নিম্নলিখিত কাগজপত্র গুলো প্রয়োজন হবে-
- ইপিআই টিকাকার্ড অথবা জন্মের সময় স্বাস্থ্য কর্মীর প্রত্যয়ন পত্র (স্বাক্ষর ও সিল সহ)
- পিতা মাতার জন্ম নিবন্ধন নাম্বার ও জাতীয় পরিচয় পত্রের ফটোকপি
- ঠিকানা প্রমাণের জন্য বাসার হোল্ডিং নাম্বার অথবা যেকোনো বিল অথবা ট্যাক্সের রশিদ
- একটি মোবাইল নাম্বার
৫ বছর বয়সের পর
শিশুর বয়স যদি পাঁচ বছর পার হয়ে যায় সে ক্ষেত্রে জন্ম নিবন্ধন অনলাইন আবেদনের জন্য যে সকল ডকুমেন্টগুলো প্রয়োজন হবে সেগুলো হচ্ছে-
- প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা অথবা জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট অথবা মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট এর ফটোকপি
- পিতা মাতার জন্ম নিবন্ধন নাম্বার ও জাতীয় পরিচয় পত্রের ফটোকপি এবং একটি মোবাইল নাম্বার
- ঠিকানা প্রমাণের জন্য হোল্ডিং ট্যাক্স অথবা যে কোন বিল বা ট্যাক্স রশিদের ফটোকপি
নতুন জন্ম নিবন্ধন আবেদন করার ফি
অনেকেই নতুন জন্ম নিবন্ধন ফি সম্পর্কে জানতে চান। আমরা যখন স্থানীয় কার্যালয়ে গিয়ে জন্ম নিবন্ধন করতে চাই তখন আমাদের কাছে সরকারি ফি এর চেয়ে অনেক বেশি ফি ধার্য করা হয়।
তবে নতুন জন্ম নিবন্ধন আবেদন ফি সরকার কর্তৃক একেবারেই কম করে রাখা হয়েছে।
যেমন শিশুর জন্মের দিন থেকে ৪৫ দিন বয়স পর্যন্ত এ সময়ের মধ্যে যদি জন্ম নিবন্ধন করা হয় তাহলে এর জন্য কোন নিবন্ধন ফি দিতে হবে না।
শিশুর বয়স ৪৬ দিন থেকে পাঁচ বছর বয়সের মধ্যে জন্ম নিবন্ধন অনলাইন আবেদনের ক্ষেত্রে ২৫ টাকা প্রযোজ্য হবে।
অন্যদিকে পাঁচ বছরের বেশি বয়স হয়ে গেলে সেক্ষেত্রে ৫০ টাকা পর্যন্ত ফি প্রযোজ্য হবে। তবে আমরা যখন নিকটস্থ কার্যালয়ে গিয়ে জন্ম নিবন্ধন করি তখন আমাদের কাছে ৩০০/৪০০/৫০০ বা তারও বেশি টাকা ধার্য করা হয়।
আমাদের মনে রাখতে হবে জন্ম নিবন্ধনের ফি ২৫ টাকা থেকে ৫০ টাকা পর্যন্ত। এর বেশি যেই ফি চাওয়া হয় সেটা কোন সরকারি ফি নয়। সুতরাং প্রতারণায় পড়ার ক্ষেত্রে এক্ষেত্রে অবশ্যই সাবধান থাকবেন।
জন্ম নিবন্ধন অনলাইন আবেদন
জন্ম নিবন্ধন অনলাইন অথবা নতুন জন্ম নিবন্ধন আবেদন করার জন্য উপর উল্লেখিত ডকুমেন্টসগুলো প্রয়োজন হবে।
নতুন জন্ম নিবন্ধন আবেদন করার সাধারণত দুটি পদ্ধতি রয়েছে তার মধ্যে একটি হচ্ছে সরাসরি জন্ম নিবন্ধন কার্যালয়ে গিয়ে আবেদন করা।
আরেকটি হচ্ছে বাসায় বসে জন্ম নিবন্ধন অনলাইন আবেদন করা। নিকটস্থ জন্ম নিবন্ধন কার্যালয়ে গিয়ে আবেদন করার ক্ষেত্রে অনেক ঝামেলা পোহাতে হয় কারণ এটি অনেক সময় সাপেক্ষ বিষয়।
সবকিছু অনলাইন ভিত্তিক হওয়ায় বর্তমানে অনলাইনে জন্ম নিবন্ধনের আবেদন সম্পন্ন করা যায়।
জন্ম নিবন্ধন অনলাইন আবেদন বা নতুন জন্ম নিবন্ধন আবেদনের জন্য কি কি করতে হবে সেটি নিচে স্টেপ বাই স্টেপ দেখানো হয়েছে।
সুতরাং বয়স ভেদে প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টগুলো সংগ্রহ করে নিচে দেওয়া প্রক্রিয়াটি ফলো করুন।
অনলাইনে নতুন জন্ম নিবন্ধন আবেদন করার নিয়ম
এখন চলুন মূল আলোচনায় ফিরে যাওয়া যাক সেটি হচ্ছে জন্ম নিবন্ধন অনলাইন আবেদন কিভাবে করব সেটি আমরা এখন জানবো।
জন্ম নিবন্ধন অনলাইন আবেদন করার জন্য আপনার প্রথমত একটি স্মার্ট ফোন অথবা কম্পিউটার বা ল্যাপটপ এর প্রয়োজন হবে।
এরপর উপরে যেই ডকুমেন্টস গুলোর কথা উল্লেখ করা হয়েছে সেই সকল ডকুমেন্টগুলো সংগ্রহ করে নিচে দেওয়া জন্ম নিবন্ধন অনলাইন আবেদন করার নিয়মটি ফলো করুন।
প্রথম ধাপঃ ঠিকানা সিলেক্ট করা
জন্ম নিবন্ধন অনলাইন আবেদন করার প্রথম ধাপে নিবন্ধনধারীর তথ্য প্রদান করতে হবে।
- এজন্য প্রথমেই ভিজিট করুন জন্ম নিবন্ধন আবেদন ওয়েব সাইটে।
- এখানে ভিজিট করার পর নিচের ছবির মত একটি পেজ দেখতে পাবেন।
- এখানে মূলত তিনটি অপশন থাকবে। একটি হচ্ছে জন্মস্থান, অন্যটি হচ্ছে স্থায়ী ঠিকানা, এবং আরেকটি হচ্ছে বর্তমান ঠিকানা। অর্থাৎ জন্ম নিবন্ধন অনলাইন আবেদন করার পর জন্ম নিবন্ধন সার্টিফিকেটটি আপনি কোন ঠিকানা থেকে সংগ্রহ করতে চান।
- যদি এটি জন্মস্থান থেকে সংগ্রহ করতে চান তাহলে অবশ্যই জন্মস্থান অপশনটি সিলেক্ট করবেন। আর যদি জন্মস্থান এবং স্থায়ী ঠিকানা একই হয়ে থাকে তাহলে যে কোন একটি সিলেক্ট করলেই হবে।
- তবে আপনি যদি বিদেশ থেকে জন্ম নিবন্ধন করতে চান তাহলে নিচে দেওয়া “আপনি যদি বাংলাদেশ দূতাবাসে জন্ম নিবন্ধন আবেদন করতে চান তবে এটি নির্বাচন করুন” এই অপশন টির বাম পাশে টিক মার্ক দিয়ে পরবর্তী বাটনে প্রেস করতে হবে।
- তবে আপনি যদি নিজ দেশে থেকেই আবেদন করতে চান তাহলে উপরের তিনটি অপশন থেকে যেকোনো একটি সিলেক্ট করুন।
- এরপর এটি সিলেক্ট করার পর ‘পরবর্তী’ বাটনে প্রেস করুন।
দ্বিতীয় ধাপঃ নিবন্ধনাধীন ব্যক্তির তথ্য প্রদান করা
- জন্ম নিবন্ধন অনলাইন আবেদন করার দ্বিতীয় পর্যায়ে নিবন্ধনাধীন ব্যক্তির পরিচিতি প্রদান করতে হবে। এখানে নিবন্ধনাধীন ব্যক্তির পরিচিতি এবং জন্মস্থানের ঠিকানা নামে দুটি সেকশন পাবেন।
- প্রথম সেকশনে নিবন্ধনাধীন ব্যক্তির নাম বাংলায় এবং ইংরেজিতে লিখতে হবে।
- ইংরেজিতে লেখার ক্ষেত্রে অবশ্যই সবগুলো ক্যাপিটাল অক্ষরে লিখতে হবে।
- এরপর নামের শেষ অংশ বাংলায় এবং নামের শেষ অংশ ইংরেজিতে লিখতে হবে। অর্থাৎ কারো নামে যদি দুই তিনটি করে শব্দ থাকে তাহলে প্রথম একটি বা দুইটি শব্দ প্রথমে দিবেন এবং নামের শেষ অংশের জায়গায় বাকি শব্দটি বসিয়ে দিবেন।
- এরপর জন্ম তারিখ, লিঙ্গ এগুলো প্রদান করতে হবে।
- এরপর চলে আসুন জন্মস্থানের ঠিকানা সেকশনে।
- এখানে দেশ, বিভাগ, জেলা, সিটি কর্পোরেশন বা উপজেলা, পৌরসভা বা ইউনিয়ন, ওয়ার্ড নম্বর, ডাকঘর বাংলা এবং ইংরেজিতে, গ্রাম/পাড়া/মহল্লা বাংলা এবং ইংরেজিতে, বাসা ও সড়ক নাম্বার প্রদান করতে হবে।
- এই তথ্যগুলো সঠিকভাবে প্রদান করে একবার খুব ভালোভাবে চেক করে ‘পরবর্তী’ বাটনে প্রেস করুন।
তৃতীয় ধাপঃ পিতা-মাতার তথ্য প্রদান করা
- তৃতীয় ধাপে এসে নিবন্ধনাধীন শিশু বা ব্যক্তির পিতা-মাতার তথ্য প্রদান করতে হবে।
- পিতা মাতার তথ্য সেকশনে প্রথমত পিতার তথ্য প্রদান করতে হবে, এরপর মাতার তথ্য প্রদান করতে হবে।
- প্রথমেই রয়েছে পিতার জন্ম নিবন্ধন নাম্বার। এক্ষেত্রে পিতার জন্ম নিবন্ধন নাম্বারটি প্রদান করতে হবে।
- তবে মনে রাখতে হবে পিতার জন্ম নিবন্ধন অবশ্যই ডিজিটাল জন্ম নিবন্ধন হতে হবে অর্থাৎ সেটি যেন অনলাইনের ডাটাবেজে সংরক্ষণ করা থাকে।
- যদি হাতে লেখা জন্ম নিবন্ধন হয় তাহলে সে ক্ষেত্রে অনলাইনে আবেদন করা যাবে না। মাতার তথ্যের ক্ষেত্রেও একই নিয়ম প্রযোজ্য হবে।
- পিতা মাতার জন্ম নিবন্ধন অনলাইনে সংরক্ষণ করা আছে কিনা সেটি এখান থেকে চেক করে নিন।
- যদি জন্ম নিবন্ধন অনলাইনে না থাকে তাহলে সে ক্ষেত্রে আপনি এটি অনলাইনে করতে পারবেন না। আপনাকে নিকটস্থ কার্যালয়ে গিয়ে আবেদন সম্পন্ন করতে হবে।
সুতরাং এই তথ্যগুলো দেওয়া হয়ে গেলে পরবর্তী বাটনের প্রেস করুন।
চতুর্থ ধাপঃ স্থায়ী এবং বর্তমান ঠিকানা প্রদান করা
- এই ধাপে এসে স্থায়ী এবং বর্তমান ঠিকানা সিলেক্ট করতে হবে।
- স্থায়ী এবং বর্তমান ঠিকানা দেওয়ার জন্য এখানে ‘কোনোটিই নয়’ অপশনটি সিলেক্ট করুন।
- তাহলেই নিচে ঠিকানা দেওয়ার অপশন চলে আসবে। এখানে প্রথমে স্থায়ী ঠিকানোর সেকশন চলে আসবে।
- তার উপরে দেখতে পাবেন ”জন্মস্থানের ঠিকানা ও স্থায়ী ঠিকানা একই” নামে একটি অপশন রয়েছে।
- আপনার যদি জন্মস্থানের ঠিকানা এবং স্থায়ী ঠিকানা একই হয় তাহলে এখানে অবশ্যই টিক চিহ্ন দিয়ে নিচের অপশন গুলো পূরণ করবেন।
- এখানে স্থায়ী ঠিকানার সেকশনে প্রথমেই দেশ,এরপর বিভাগ, ডাকঘর বাংলা এবং ইংরেজিতে, গ্রাম/পাড়া/মহল্লা বাংলা এবং ইংরেজিতে, বাসা/সড়ক নাম্বার বাংলা এবং ইংরেজিতে ভালোভাবে লিখতে হবে।
- এই তথ্যগুলো দেওয়া হয়ে গেলে বর্তমান ঠিকানা সেকশনে চলে আসুন।
- বর্তমান ঠিকানা সেকশনের একটু উপরে দেখবেন ‘স্থায়ী ঠিকানা ও বর্তমান ঠিকানা একই’ নামে একটি অপশন রয়েছে।
- আপনার যদি স্থায়ী ঠিকানা এবং বর্তমান ঠিকানা একই হয়ে থাকে তাহলে এর বাম পাশে টিক চিহ্ন দিন। এর বাম পাশে একটি চিহ্ন দিলে বর্তমান ঠিকানার সেকশনটি আপনাকে পুনরায় পূরণ করতে হবে না।
এরপর তথ্যগুলো দেওয়া হয়ে গেলে পরবর্তী বাটনে প্রেস করুন।
পঞ্চম ধাপঃ আবেদনকারীর তথ্য প্রদান করা
- এই ধাপে এসে যিনি নিবন্ধনাধীন ব্যক্তির আবেদন করছেন তার তথ্য প্রদান করতে হবে।
- আপনি যদি নিজেই নিজের জন্ম নিবন্ধন আবেদন করতে চান তাহলে এখানে অবশ্যই নিজ অপশনটি সিলেক্ট করে দিয়ে নিচে আপনার নাম এবং ফোন নাম্বার প্রদান করতে হবে।
আর যদি নিজে না হয়ে অন্য কেউ জন্ম নিবন্ধনের আবেদন করে তাহলে অন্যান্য অপশনটি সিলেক্ট করে দিতে হবে।
এরপর আবেদনকারীর নাম এবং ফোন নাম্বার প্রদান করতে হবে। যদি ইমেইল থাকে তাহলে ডানপাশে ইমেইল টি প্রদান করতে হবে। না থাকলে সমস্যা নেই।
এই তথ্যগুলো দেওয়া হয়ে গেলে পরবর্তী বাটনে প্রেস করে আবেদনটি সম্পন্ন করুন।
ষষ্ঠ ধাপঃ সংযোজন
জন্ম নিবন্ধন অনলাইন আবেদনের এই পর্যায়ে এসে কিছু ডকুমেন্টস সংযোজন করে দিতে হবে।
- এখানে কি রকম ডকুমেন্টস আপলোড করতে হবে সেটি নির্দেশনা দেওয়া থাকবে যেমনটি নিচের ছবিতে দেখানো হয়েছে।
- নিচের ছবিতে যেগুলোর কথা বলা হয়েছে এখানে দুইটি সেকশন থেকে যেকোনো দুইটি ডকুমেন্টস আপলোড করে দিলেই হবে।
- ডকুমেন্টসগুলো আপলোড করা হয়ে গেলে “সাবমিট” বাটনে ক্লিক করে জন্ম নিবন্ধন অনলাইন আবেদনটি সম্পন্ন করুন।
সপ্তম ধাপঃ আবেদনের অনলাইন কপি প্রিন্ট করা
এই ধাপে এসে নতুন জন্ম নিবন্ধন আবেদনের অনলাইন কপিটি প্রিন্ট করে নিতে হবে।
আপনার যদি প্রিন্টার না থাকে তাহলে এটি পিডিএফ ফাইল আকারে ডাউনলোড করে নিয়ে পরবর্তীতে অন্য কোন প্রিন্টার সার্ভিস সেন্টারে গিয়ে প্রিন্ট করে নিতে পারবেন।
আবেদনপত্রটি প্রিন্ট করার সময় খেয়াল করবেন আবেদন পত্রের উপরে এবং নিচের ইনফরমেশন গুলো যেন ভালো করে দেখা যায়। কারণ আবেদন পত্রের হেডার সেকশনে একটি অ্যাপ্লিকেশন আইডি দেওয়া থাকবে।
এই অ্যাপ্লিকেশন আইডিটি পরবর্তীতে অবশ্যই প্রয়োজন হবে আবেদন পত্রের বর্তমান অবস্থা চেক করার জন্য।
অষ্টম ধাপঃ নিকটস্থ কার্যালয়ে আবেদনপত্র সাবমিট করা
জন্ম নিবন্ধন অনলাইন আবেদন করার পর এই ধাপে এসে নিকটস্থ কার্যালয়ে গিয়ে বয়স ভেদে প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টসগুলো প্রদান করতে হবে।
সুতরাং উপরে উল্লেখিত বয়স অনুযায়ী যে ডকুমেন্টগুলো প্রয়োজন হবে সে সকল ডকুমেন্টগুলো সংগ্রহ করে নিকটস্থ জন্ম নিবন্ধন কার্যালয়ে গিয়ে সেগুলো জমা দিন। এগুলো জমা দিলেই আপনার কাজ শেষ।
জন্ম নিবন্ধন সনদ পেতে কতদিন সময় লাগে?
অনেকেরই প্রশ্ন জন্ম নিবন্ধন অনলাইন আবেদন করার পর সেটি হাতে পেতে কতদিন সময় লাগতে পারে।
সাধারণত জন্ম নিবন্ধন অনলাইন আবেদন যেদিন করা হয় সেদিনেও এটি পাওয়া সম্ভব। তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে এটি পাওয়ার জন্য কয়েকদিন সময় নেওয়া হয়।
সাধারণত ৩ থেকে ১৫ দিনের মধ্যেই জন্ম নিবন্ধনের সার্টিফিকেটটি প্রদান করা হয়। তবে এক্ষেত্রে যদি আপনার হাতে পেতে দেরী হয়ে থাকে তাহলে আপনি জন্ম নিবন্ধনের বর্তমান অবস্থা চেক করতে পারবেন।
জন্ম নিবন্ধনের বর্তমান অবস্থা চেক করার নিয়ম
জন্ম নিবন্ধন অনলাইন আবেদন করার পর সেই জন্ম নিবন্ধনটি যদি আপনার হাতে পেতে সময় লাগে তাহলে এটি আপনি চেক করে দেখতে পারবেন যে আপনার জন্ম নিবন্ধনের অবস্থা এখন কোন পর্যায়ে রয়েছে বা সেটি ডেলিভারির জন্য রেডি হয়েছে কিনা।
এজন্য নিচে দেওয়া পদ্ধতিটি ফলো করুন।
- জন্ম নিবন্ধন বর্তমান অবস্থা চেক করার জন্য প্রথমে ভিজিট করুন জন্ম নিবন্ধন আবেদনের বর্তমান অবস্থা
- এখানে ভিজিট করার পর দুটি তথ্য প্রদান করতে হবে সেটি হচ্ছে এপ্লিকেশন আইডি এবং জন্ম তারিখ।
- জন্ম নিবন্ধন অনলাইন আবেদন করার পর যেই কপিটি প্রিন্ট করে নিয়েছেন সেখানে উপরে দেখবেন অ্যাপ্লিকেশন আইডি দেওয়া আছে।
- এই অ্যাপ্লিকেশন আইডি এখানে প্রদান করে নিচে জন্ম তারিখ প্রদান করে অনুসন্ধান বাটনে ক্লিক করে জন্ম নিবন্ধনের অনলাইন আবেদনের বর্তমান অবস্থা চেক করুন।
অনলাইনে জন্ম নিবন্ধন যাচাই করবেন যেভাবে
আপনি যদি জন্ম নিবন্ধনের সার্টিফিকেটটি হাতে পেয়ে থাকেন অথবা হাতে না পেলেও যদি এটি যাচাই করতে চান যে আপনার জন্ম নিবন্ধন সার্টিফিকেটটি অনলাইনে সংরক্ষণ করে রাখা হয়েছে কিনা বা জন্ম নিবন্ধন সার্টিফিকেটটি তে কোন প্রকার ভুল থেকে গেল কিনা।
এটি চেক করার জন্য ভিজিট করুন জন্ম নিবন্ধন যাচাই। এখানে অনলাইনে জন্ম নিবন্ধন যাচাই করার প্রক্রিয়া উল্লেখ করা হয়েছে।
নতুন জন্ম নিবন্ধন আবেদন সংক্রান্ত প্রশ্ন ও উত্তর
জন্ম নিবন্ধন সংক্রান্ত অনেকের অনেক প্রশ্ন থেকে থাকে। সে সকল প্রশ্নগুলোর মধ্য থেকে কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন আমরা এখানে তুলে ধরেছি এবং সেগুলোর উত্তর প্রদান করেছি।
এগুলোর মধ্য হতে যদি আপনার কোন প্রশ্ন থেকে থাকে তাহলে সেটির উত্তর এখান থেকে দেখে নিতে পারবেন।
পিতা মাতার জন্ম নিবন্ধন না থাকলে কিভাবে জন্ম নিবন্ধনের আবেদন করব?
উত্তরঃ পূর্বে পিতা মাতার জন্ম নিবন্ধন না থাকলেও জন্ম নিবন্ধনের অনলাইন আবেদন করা যেত। কিন্তু এখন শিশুর জন্ম নিবন্ধন করার আগে পিতা মাতার জন্ম নিবন্ধন করিয়ে নিতে হয়।
কারণ ২০২৩ সালের নতুন আপডেট তথ্য অনুযায়ী ২০০১ বা তার পরবর্তী সময়ে জন্মগ্রহণকারী সকল শিশুর জন্ম নিবন্ধন অনলাইন আবেদন করার জন্য অবশ্যই পিতা-মাতার জন্ম নিবন্ধন প্রয়োজন হবে।
জন্ম নিবন্ধন সনদ পেতে কত দিন সময় লাগে?
উত্তরঃ যদি কার্যালয়ে গিয়ে জন্ম নিবন্ধন করেন তাহলে সেই দিনই জন্ম নিবন্ধন সার্টিফিকেটটি পাওয়া যাবে। তবে অনলাইনে আবেদনের ক্ষেত্রে জন্ম নিবন্ধন সার্টিফিকেটটি পেতে ৩ থেকে ১৫ দিনের মতো সময় লাগতে পারে।
তবে আপনার যদি খুব জরুরি প্রয়োজন হয়ে থাকে তাহলে সে ক্ষেত্রে আপনি আপনার স্থানীয় কার্যালয়ে গিয়ে তাদের সাথে কথা বলতে পারেন।
একই ব্যক্তির জন্ম নিবন্ধন কি দুই বার করা যায়?
উত্তরঃ একই ব্যক্তির জন্ম নিবন্ধন দুই বার করা যায় না। এক্ষেত্রে দ্বিতীয়বার জন্ম নিবন্ধন করার ক্ষেত্রে ডুপ্লিকেট এন্ট্রি দেখাবে।
জন্ম নিবন্ধন করতে কত টাকা লাগে?
উত্তরঃ সাধারণত শিশুর জন্মের পর থেকে ৪৫ দিন বয়স পর্যন্ত জন্ম নিবন্ধনের জন্য কোন ফি প্রযোজ্য হয় না।
তবে ৪৫ দিন পর থেকে ৫ বছর বয়স পর্যন্ত জন্ম নিবন্ধন করার ক্ষেত্রে ২৫ টাকা প্রযোজ্য হবে এবং পাঁচ বছর বয়সের বেশি হলে সে ক্ষেত্রে ৫০ টাকা প্রযোজ্য হবে।
শেষ কথা
অনলাইনে নতুন জন্ম নিবন্ধন আবেদন করতে গিয়ে কোন সমস্যা হয়ে থাকে সে ক্ষেত্রে অবশ্যই নিকটস্থ কার্যালয়ে যোগাযোগ করুন।
জন্ম নিবন্ধন অনলাইন আবেদন করার পর প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস জমা দিতে গিয়ে যদি নিকটস্থ কার্যালয় থেকে আপনার উপর সরকারি ফি থেকে বেশি ফি ধার্য করা হয় তাহলে সে ক্ষেত্রে অবশ্যই সচেতন থাকুন।
জন্ম নিবন্ধন অনলাইন আবেদন সংক্রান্ত যদি কোন আপনার প্রশ্ন থেকে থাকে তাহলে সেটি কমেন্ট সেকশনে যোগ করতে পারেন। আশা করি আমাদের টিম যত দ্রুত সম্ভব আপনাকে তথ্য দিয়ে সাহায্য করার জন্য চেষ্টা করবে।