অনলাইনে ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করার সহজ ও সঠিক নিয়ম জানুন এখান থেকে।
ভোটার আইডি কার্ডে যদি নিজের নাম, জন্ম তারিখ, পিতা-মাতার নাম, ধর্ম, মোবাইল নম্বর, জাতীয়তা, লিঙ্গ ইত্যাদির যেকোনো একটি ভুল হয়ে থাকে তাহলে সেটি বাসায় বসে অনলাইনে সংশোধন করা যায়।
আপনার হাতে যে স্মার্টফোনটি রয়েছে এটি দিয়েই আপনি অনলাইনে ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন সংশোধন করে নিতে পারবেন।
ভোটার আইডি কার্ড সংশোধনের জন্য আলাদাভাবে কিছু ডকুমেন্টস স্ক্যান করে আপলোড করে দিতে হবে।
কি কি ডকুমেন্টস লাগবে সেগুলোর নিচে সংশোধনের ক্যাটাগরি ভেদে উল্লেখ করা হয়েছে।
ভোটার আইডি কার্ডের যেকোনো তথ্য সংশোধনের জন্য আজকের এই আলোচনার সবগুলো ধাপ খুব ভালোভাবে অনুসরণ করুন।
ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন
অনলাইনে ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করার জন্য বেশ কিছু কারণ রয়েছে। যখন ভোটার আইডি কার্ড রেজিস্ট্রেশন করা হয় তখন যেকোন তথ্য ভুল হয়ে যাওয়া অস্বাভাবিক কিছু না।
কারণ অনেক তথ্য দেওয়ার সময় কোন একটা তথ্য ভুল হয়ে যেতেই পারে।
যেমন নামের কোন অংশে ভুল হয়ে যেতে পারে অথবা জন্ম তারিখ ভুল হয়ে যেতে পারে কিংবা পিতা মাতার নামের কোন অংশে ভুল হয়ে যেতে পারে।
এ সকল ভুলগুলো যত দ্রুত সম্ভব সংশোধন করে নেওয়া জরুরী কারণ এ সকল ভুল হলে যদি ভোটার আইডি কার্ডে থেকে যায় তাহলে যে কোন অনলাইন ভিত্তিক কাজের অনেক সমস্যায় পড়ার সম্ভাবনা থাকে।
আপনি যদি এরকম কোন সমস্যায় পড়ে থাকেন আপনার যদি ভোটার আইডি কার্ডে কোন তথ্য ভুল হয়ে থাকে তাহলে আজকের দেওয়া নিয়ম অনুযায়ী অনলাইনে ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করে নিন খুব সহজে।
অনলাইনে ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করার নিয়ম
এখন চলুন আজেবাজে কথা না বাড়িয়ে আমরা মূল আলোচনায় চলে যাই। অনলাইনে ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করার জন্য আপনার ভোটার আইডি কার্ডের নাম্বার এবং জন্ম তারিখটি প্রয়োজন হবে।
এই দুটি তথ্য সংগ্রহ করে আপনার স্মার্টফোনের সাহায্যে নিচের ধাপ গুলো অনুসরণ করুন।
প্রথম ধাপঃ একাউন্ট রেজিস্ট্রেশন
অনলাইনে ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন এর প্রথম পর্যায়ে একটি অ্যাকাউন্ট রেজিস্ট্রেশন করে নিতে হবে। এর অর্থ হচ্ছে আপনার ভোটার আইডি কার্ডের একটি প্রোফাইল তৈরি করে নিতে হবে।
এই প্রোফাইলটি তৈরি করে নিলে পরবর্তীতে আপনি ভোটার আইডি কার্ডের যে কোন তথ্য সংশোধনসহ আপনার ভোটার আইডি কার্ডটি যে কোন সময়ে ডাউনলোড করেও নিতে পারবেন।
- ভোটার আইডি অ্যাকাউন্ট রেজিস্ট্রেশন করার জন্য প্রথমে ভিজিট করুন বাংলাদেশ এনআইডি অ্যাপ্লিকেশন সিস্টেম
- এখানে ভিজিট করার পর একটি পেজ চলে আসবে।
- এই পেইজে সাধারণত তিনটি বক্স থাকবে।
- প্রথম বক্সে আপনার ‘ভোটার আইডি কার্ড নাম্বার’ অথবা নির্বাচন অফিস থেকে দেওয়া ভোটার ‘ফর্ম নাম্বার’ টি দিয়ে দিতে হবে।
- মাঝখানের বক্সে ‘জন্ম তারিখ’ সঠিকভাবে বসিয়ে দিন এবং শেষে ক্যাপচা কোডটি ভালোভাবে বসিয়ে দিয়ে ‘সাবমিট’ বাটনে ক্লিক করুন।
দ্বিতীয় ধাপঃ ঠিকানা প্রদান করা
- এনআইডি অ্যাকাউন্ট রেজিস্ট্রেশনের দ্বিতীয় ধাপে আপনাকে আপনার এনআইটি কার্ডের তথ্য অনুযায়ী এখানে ঠিকানা প্রদান করে দিতে হবে।
- এখানে আপনার বর্তমান এনআইডি কার্ডের তথ্য অনুযায়ী ‘স্থায়ী ঠিকানা’ এবং ‘বর্তমান ঠিকানা’ ভালোভাবে লিখে দিতে হবে।
- এগুলো করা হয়ে গেলে পরের ধাপে প্রেস করতে হবে।
তৃতীয় ধাপঃ মোবাইল নাম্বার ভেরিফিকেশন
- তৃতীয় ধাপে আপনাকে একটি ‘মোবাইল নাম্বার’ ভেরিফিকেশন করতে হবে।
- আপনার এনআইডি কার্ড রেজিস্ট্রেশনের সময় যে মোবাইল নাম্বারটি দিয়েছিলেন সেই মোবাইল নাম্বারটি এখানে দিন।
- তবে অন্য যেকোনো একটি মোবাইল নাম্বার দিয়ে দিলেও চলবে। এটি করার জন্য মোবাইল পরিবর্তন করুন অপশনে যেতে হবে।
- মোবাইল নাম্বারটি এখানে বসিয়ে দিয়ে ‘বার্তা পাঠান’ অপশনে ক্লিক করুন।
- তাহলে আপনার ফোনে একটি এসএমএস চলে আসবে।
- এই এসএমএস টিতে একটি কোড নাম্বার দেওয়া থাকবে।
- এই কোডটি সঠিকভাবে বসিয়ে দিয়ে ‘বহাল’ বাটনে প্রেস করুন।
- তাহলে আপনার মোবাইল নাম্বার ভেরিফিকেশন হয়ে যাবে।
চতুর্থ ধাপঃ ফেস ভেরিফিকেশন
অনলাইনে ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করার চতুর্থ ধাপে আপনাকে একটি এনআইডি ওয়ালেট অ্যাপ ইন্সটল করে নিতে হবে। কারণ এই ধাপে আপনাকে আপনার ফেস ভেরিফিকেশন করে নিতে হবে। এই ধাপে একটি কিউআর কোড দেওয়া থাকবে।
- এই কোডটি এখান থেকে কপি করুন এবং এনআইডি ওয়ালেট অ্যাপ টি ইন্সটল করার পর সেই কিউআর কোড স্ক্যান করে নিন।
- তবে অন্য একটি ফোন থেকে এনআইডি ওয়ালেট অ্যাপটি ইন্সটল করে নিয়ে সেই ফোন থেকে আপনার ফোনের কিউআর কোডটি স্ক্যান করে নিলে ভালো হয়। এতে করে আপনাকে এনআইডি ওয়ালেট অ্যাপ এর যে ঝামেলাটি আছে সেটি এখানে পোহাতে হবে না।
- সুতরাং এই পর্যায়ে যে একটি কিউআর কোড থাকবে এই কোডটি স্ক্যান করে নিন।
- স্ক্যান করা হয়ে গেলে এখানে ‘Start Face Verification’ নামে একটি অপশন চলে আসবে।
- এই অপশনে ক্লিক করলে ফোনের ক্যামেরা ওপেন হয়ে যাবে।
- যার এনআইডি কার্ড সংশোধন করতে চাচ্ছেন তার মুখ বরাবর ক্যামেরা ধরতে হবে।
- চোখ হালকা বন্ধ করে খুলুন এবং মাথা একবার ডানে এবং একবার বামে ঘোরান।
- তাহলে ভেরিফিকেশন সফলভাবে সম্পন্ন হয়ে যাবে।
পঞ্চম ধাপঃ পাসওয়ার্ড সেটআপ করা
- অনলাইনে ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন এর পঞ্চম ধাপে একটি ‘পাসওয়ার্ড’ সেট আপ করে নিতে হবে। এটি হচ্ছে আপনার এই প্রোফাইলের পাসওয়ার্ড।
- পরবর্তীতে যদি আপনি আপনার এনআইডি কার্ডের কোন তথ্য সংশোধন করতে চান অথবা এনআইডি কার্ডটি ডাউনলোড করতে চান তাহলে এই পাসওয়ার্ডটি দিয়ে আপনি এখানে প্রবেশ করতে পারবেন।
- তাহলে আর উপরোক্ত ঝামেলা গুলো যেমন ফেস ভেরিফিকেশন, মোবাইল নাম্বার ভেরিফিকেশন, তথ্য প্রদান করা, এই ঝামেলা গুলো পোহাতে হবে না।
- এজন্য এখানে একটি পাসওয়ার্ড সেটআপ করে নিন।
ষষ্ঠ ধাপঃ প্রোফাইলে প্রবেশ করুন
- ভোটার আইডি কার্ড সংশোধনের ষষ্ঠ ধাপে এসে এখানে কয়েকটি অপশন শো করবে। যেমন প্রোফাইল, পাসওয়ার্ড পরিবর্তন, এবং ডাউনলোড। এগুলোর মধ্যে হতে ডাউনলোড বাটনে প্রেস করলে আপনার ভোটার আইডি কার্ডটি ডাউনলোড হয়ে যাবে।
- তবে আপনি যেহেতু ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করতে চাচ্ছেন এজন্য ‘প্রোফাইল’ অপশনে ক্লিক করুন।
- প্রোফাইল অপশন এ ক্লিক করলে দেখতে পাবেন আপনার NID কার্ডের সমস্ত তথ্য গুলো এখানে শো করবে।
সপ্তম ধাপঃ ভোটার তথ্য সংশোধন করা
- ভোটার আইডি কার্ডের যেকোনো তথ্য সংশোধনের জন্য এখানে উপরের ‘এডিট’ বাটনে ক্লিক করুন।
- এডিট বাটনে ক্লিক করলেই সমস্ত তথ্য গুলোর জন্য আলাদাভাবে একটি করে বক্স চলে আসবে যেখানে আপনি সঠিক তথ্য লিখে দিয়ে আপনার ভোটার আইডি কার্ডের তথ্য যেকোনো তথ্য সংশোধন করতে পারবেন।
- এখানে দেখবেন তিনটি ক্যাটাগরি রয়েছে। তার মধ্যে প্রথমটি হচ্ছে ব্যক্তিগত তথ্য, দ্বিতীয়টি হচ্ছে অন্যান্য তথ্য, এবং সবার শেষেরটি হচ্ছে ঠিকানা।
- আপনি যদি আপনার ব্যক্তিগত তথ্য সংশোধন করতে চান তাহলে ব্যক্তিগত ক্যাটাগরিতে ক্লিক করে আপনার ব্যক্তিগত তথ্য সংশোধন করতে পারবেন। যেমন আপনার নাম, বয়স, জন্ম তারিখ, পিতা-মাতার নাম ইত্যাদি।
- অন্যান্য তথ্যের ক্ষেত্রে আপনার লিঙ্গ, জাতীয়তা, পেশা, ইত্যাদির তথ্য গুলো সংশোধন করে নিতে পারবেন।
- আর যদি আপনি ঠিকানা পরিবর্তন করতে চান তাহলে ঠিকানা ক্যাটাগরিতে ক্লিক করে সংশোধন করতে পারবেন।
- সুতরাং এখানে যে তথ্যটি সংশোধন করতে চাচ্ছেন সেই তথ্যের বাম পাশে দেখবেন একটি চেকবক্স রয়েছে।
- এই চেকবক্সটিতে টিকমার্ক দিয়ে দিলেই আপনার তথ্য সংশোধনের একটি বক্স ওপেন হয়ে যাবে।
- এখানে ভুল তথ্যের পরিবর্তে সঠিক তথ্য দিয়ে বক্সটি পূরণ করুন।
- এভাবে আপনি যেই যেই তথ্যগুলো সংশোধন করতে চাচ্ছেন সেই অপশন গুলোর বাম পাশে টিক মার্ক দিয়ে এগুলো সংশোধন করে নিতে পারবেন।
অষ্টম ধাপঃ পরিবর্তন
- এই ধাপে এসে আপনি কি কি পরিবর্তন করেছেন সেগুলো দেখতে চাইলে ‘পরিবর্তন’ অপশনে ক্লিক করুন।
- তাহলে আপনার পূর্বের কোন তথ্য ছিল এবং বর্তমানে কোন তথ্য রয়েছে সেটি দেখতে পাবেন।
- সুতরাং পরিবর্তন অপশনে ক্লিক করে একবার প্রিভিউ আকারে আপনার সংশোধন গুলো দেখে নিন।
নবম ধাপঃ ফি প্রদান করা
- এই ধাপে এসে জাতীয় পরিচয় পত্র সংশোধনের জন্য আপনাকে ফি প্রদান করতে হবে।
- আপনার তথ্যের ধরন অনুযায়ী আপনাকে কত টাকা ফি প্রদান করতে হবে সেটি এখানে উল্লেখ করা থাকবে।
- সাধারণত জাতীয় পরিচয় পত্রের তথ্য সংশোধনের জন্য ৩৪৫ টাকা ফি প্রদান করতে হয়।
- এটি জানার জন্য পরবর্তী বাটনে প্রেস করুন।
- আপনার বিকাশ, নগদ, অথবা রকেট একাউন্টের মাধ্যমে জাতীয় পরিচয় পত্র সংশোধনের ফি প্রদান করুন।
- জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্য সংশোধনের ফি প্রদান করতে চাইলে নিচে ভোটার আইডি কার্ডের তথ্য সংশোধন করার ফি প্রদানের প্রক্রিয়া তুলে ধরা হয়েছে। সেখান থেকে দেখে নিন।
- ফি প্রদান করা হয়ে গেলে আপনার ভোটার তথ্য সংশোধনের যে পর্যায়ে ছিলেন সেই পর্যায়ে থেকে এখানে একটি অপশন সিলেক্ট করে দিতে হবে।
- যদি আপনার লেমিনেটিং করা ভোটার আইডি কার্ড থাকে তাহলে এখানে রেগুলার সিলেক্ট করে দিতে হবে।
- আর যদি আপনার স্মার্ট কার্ড থেকে থাকে তাহলে এখানে স্মার্ট কার্ড সিলেক্ট করে দিতে হবে।
ভোটার আইডি কার্ডের তথ্য সংশোধনের ফি প্রদান করার প্রক্রিয়া
ভোটার আইডি কার্ডের তথ্য সংশোধনের ফি হচ্ছে ১১৫ থেকে ৩৪৫ টাকা যেটি সরকারিভাবে নির্ধারিত। ভোটার আইডি কার্ডের তথ্য সংশোধনের ফি বিকাশের মাধ্যমে প্রদান করার জন্য নিচের ধাপগুলো অনুসরণ করুন।
- প্রথমেই আপনার বিকাশ অ্যাপটিতে প্রবেশ করুন।
- এরপর হোমস্ক্রিন থেকে ‘পে বিল’ অপশনে চলে যান।
- এখান থেকে ‘সরকারি ফি’ অপশন টি বাছাই করুন।
- সরকারি ফি অপশনটি বাছাই করার পরবর্তী পর্যায়ে ‘আবেদনের ধরন’ নির্বাচন করুন।
- অপশন থেকে আপনি কোন ধরনের আবেদন করেছেন সেটি সিলেক্ট করে দিতে হবে।
- আপনি যদি শুধুমাত্র এনআইডি এর পার্সোনাল তথ্য চেঞ্জ করে থাকেন তাহলে এখান থেকে NID Info Correction অপশনটি সিলেক্ট করতে হবে।
- যদি আপনি অন্যান্য তথ্য সংশোধন করে থাকেন তাহলে NID Other Info Correction অপশনটি সিলেক্ট করতে হবে।
- আর যদি আপনি উভয় প্রকারের তথ্য সংশোধন করে থাকেন তাহলে এখানে Both Info Correction অপশনটি সিলেক্ট করে দিতে হবে।
- এগুলো সিলেক্ট করে দেওয়ার পর নিচে আপনার ‘NID নাম্বার’ টি প্রদান করুন এবং ‘এগিয়ে যান’ বাটনে প্রেস করুন।
- তাহলে পরবর্তী পর্যায়ে আপনাকে কত টাকা পেমেন্ট করতে হবে সেটি এখানে উল্লেখ করা থাকবে।
- পেমেন্ট সম্পন্ন করার জন্য এগিয়ে যান বাটনে প্রেস করে আপনার বিকাশ পিন নাম্বারটি প্রদান করুন এবং আপনার ভোটার তথ্য সংশোধনের ফি প্রদান সম্পন্ন করুন।
- ভোটার আইডি কার্ডের তথ্য সংশোধনের ফি প্রদান করা হয়ে গেলে আপনার প্রোফাইলে এটি উল্লেখ করা থাকবে।
দশম ধাপঃ কাগজপত্র আপলোড করা
এখন চলুন আমরা ভোটার আইডি কার্ড সংশোধনের দশম ধাপে চলে যাই।
- এই ধাপে এসে আপনার তথ্য সংশোধন অনুযায়ী কিছু ডকুমেন্টস আপলোড করে দিতে হবে।
- কোন তথ্যের জন্য কি ডকুমেন্টস আপলোড করে দিতে হবে সেটি নিচে উল্লেখ করা হয়েছে।
- সুতরাং সেখান থেকে যে কোন এক প্রকার ডকুমেন্টস স্ক্যান করে এখানে আপলোড করে দিন।
তবে খেয়াল রাখবেন, ডকুমেন্টস এর সাইজ যেন বেশি না হয়। কারন সাইজ যদি বেশি হয়ে যায় তাহলে এটি এখানে আপলোড নিতে ব্যর্থ হবে। সুতরাং ডকুমেন্টগুলো একটু এডিট করে সাইজ কম করে নিবেন।
একাদশ ধাপঃ নিশ্চিত করুন
- ভোটার তথ্য সংশোধনের এই পর্যায়ে আপনার সমস্ত তথ্যগুলো দেওয়া হয়ে গেলে ‘নিশ্চিত করুন’ অপশনটিতে ক্লিক করতে হবে।
- এই অপশনটিতে ক্লিক করলে আপনি যেসব তথ্য সমূহ প্রদান করেছেন সে সকল তথ্যগুলো একটি প্রিভিউ আকারে দেখা যাবে।
- এ সকল তথ্যগুলো আবারও একবার ভালোভাবে চেক করে নিন।
- সবকিছু ঠিক থাকলে উপরে ‘সাবমিট’ বাটনে ক্লিক করুন।
- তাহলে আপনার ভোটার তথ্য সংশোধনের আবেদন সম্পন্ন হয়ে যাবে।
- সাবমিট করা হয়ে গেলে উপরে ডাউনলোড বাটন থেকে আপনার ভোটার তথ্য সংশোধনের ফর্মটি ডাউনলোড করে নিতে হবে।
- কারণ এটি পরবর্তীতে যখন আপনি আপনার নির্বাচন অফিসে স্মার্ট কার্ড সংগ্রহ করতে যাবেন তখন এই ফর্মটি প্রয়োজন হবে।
- সুতরাং এখান থেকে ফর্ম টি ডাউনলোড করে আপনার ডিভাইসে সেভ করে রাখুন এবং পরবর্তীতে অন্য কোথাও গিয়ে প্রিন্ট করে নিন।
ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করতে কত দিন লাগে
উপরে দেওয়া প্রক্রিয়া অনুযায়ী ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করা হয়ে গেল। এখন কথা হচ্ছে ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করতে কত দিন সময় লাগতে পারে?
ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করতে কত দিন লাগে সেটির সঠিক সময়টি বলা সম্ভব নয়। কারন এটি সম্পূর্ণ নির্ভর করে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের উপরে। এজন্য আপনাকে ধৈর্য্য ধরে থাকতে হবে।
তবে এটি সংশোধন হতে সাধারণত ৭ থেকে ১৫ দিনের মত সময় লাগতে পারে।
আপনার যখন অনলাইনে ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করা হয়ে যাবে তখন আপনার ভোটার আইডি কার্ডের যে প্রোফাইল তৈরি করেছিলেন সেই প্রোফাইলে লেখা থাকবে যে আপনার সংশোধন হয়ে গেছে।
ভোটার আইডি কার্ড সংশোধনের পরে আপনি এটি চেক করে নিতে পারবেন।
আরও পড়তে পারেন – জন্ম নিবন্ধন সংশোধন করার নিয়ম
অনলাইনে ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করতে কি কি লাগে
অনলাইনে ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করতে কি কি লাগে সেটি জানা প্রয়োজন। ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করার জন্য সংশোধনের তথ্য ভেদে ডকুমেন্টস ভিন্ন ভিন্ন হতে পারে।
নিচে সংশোধনের বিষয় ভেদে কোন কোন ডকুমেন্টসগুলো প্রয়োজন হবে সেগুলো উল্লেখ করা হলো।
নিজের নাম সংশোধন করার ক্ষেত্রে
ভোটার আইডি কার্ডের নিজের নাম সংশোধন করার ক্ষেত্রে নিচে দেওয়া যে কোন একটি ডকুমেন্টস আপনাকে স্ক্যান করে আপলোড করে দিতে হবে।
- এসএসসি বা এইচএসসি অথবা সমমানের সার্টিফিকেটের স্ক্যান করা কপি
- অনলাইন জন্ম নিবন্ধন সনদ
- পাসপোর্ট অথবা ড্রাইভিং লাইসেন্স
- এমপিও সিট অথবা সার্ভিস বহি
- বিবাহিত হয়ে থাকলে বিবাহের কাবিননামা
পিতা মাতার নাম সংশোধন করার ক্ষেত্রে
এনআইডি কার্ডে আপনি যদি আপনার পিতা মাতার নাম সংশোধন করতে চান তাহলে উপরের যেকোনো একটি এ ডকুমেন্টস দিতে হবে এবং এর সাথে নিচের যে কোন একটি ডকুমেন্টস আপলোড করতে হবে।
- পিতা মাতার জাতীয় পরিচয় পত্র
- পিতা-মাতার জন্ম নিবন্ধন
ভোটার আইডি কার্ডে জন্ম তারিখ সংশোধন করতে যা প্রয়োজন
আপনি যদি ভোটার আইডি কার্ডের জন্ম তারিখ সংশোধন করতে চান তাহলে নিচে থেকে যেকোনো একটি অথবা দুইটি ডকুমেন্টস সাবমিট করে দেবেন। সেগুলো হচ্ছে-
- এসএসসি এইচএসসি কিংবা সমমানের সার্টিফিকেট
- পাসপোর্ট
- অনলাইন জন্ম নিবন্ধন সনদ
- ড্রাইভিং লাইসেন্স
ভোটার আইডি কার্ড জন্ম তারিখ সংশোধন
ভোটার আইডি কার্ড জন্ম তারিখ সংশোধন করার ক্ষেত্রে উপরোক্ত পদ্ধতিটি প্রয়োজন হবে।
আপনার যদি ভোটার আইডি কার্ডের জন্ম তারিখের যেকোনো একটি অংশে ভুল হয়ে থাকে তাহলে যত দ্রুত সম্ভব সেটি উপরে দেখানো পদ্ধতি অনুযায়ী সংশোধন করে নিন।
শুধুমাত্র জন্ম তারিখ সংশোধনের ক্ষেত্রে 230 টাকা ফি প্রযোজ্য হবে।
ভোটার আইডি কার্ড নাম সংশোধন
ভোটার আইডি কার্ডে অনেকের নামের সংশোধন করার প্রয়োজন হতে পারে। এমন অনেক রয়েছেন যাদের ভোটার আইডি কার্ডের সাথে জন্ম নিবন্ধন অথবা সার্টিফিকেটের নামের মিল নেই।
এজন্য যত দ্রুত সম্ভব ভোটার আইডি কার্ডের নাম সংশোধন করে নিতে হয়।
ভোটার আইডি কার্ডের নাম সংশোধন করার জন্য ২৩০ টাকা ফি প্রযোজ্য হবে। ভোটার আইডি কার্ডের নাম সংশোধন করার জন্য উপরে দেখানো পদ্ধতিটি ফলো করুন।
আশা করি খুব সহজে ভোটার আইডি কার্ডের নাম সংশোধন করতে পারবেন।
ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন সংক্রান্ত প্রশ্ন ও উত্তর
অনলাইনে ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন সংক্রান্ত অনেকের অনেক প্রশ্ন থেকে থাকে। সে সকল প্রশ্নগুলোর মধ্য হতে কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন সংগ্রহ করে সেগুলোর উত্তর প্রদান করা হলো।
জাতীয় পরিচয় পত্র সংশোধন হতে কতদিন সময় লাগে?
উত্তরঃ জাতীয় পরিচয় পত্র সংশোধন হতে ঠিক কতদিন লাগে সেটি সঠিকভাবে বলা সম্ভব নয়। এটা সম্পূর্ণ নির্ভর করে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের কার্যকারিতার উপর। এক্ষেত্রে আপনার ১৫ দিন থেকে তিন মাস পর্যন্ত সময় লাগতে পারে।
ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করার ফি কত টাকা?
উত্তরঃ ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করার ফি ২৩০ টাকা থেকে ৩৪৫ টাকা। যদি আপনি শুধুমাত্র একটি ক্যাটাগরির তথ্য সংশোধন করতে চান তাহলে সে ক্ষেত্রে ২৩০ টাকা ফি প্রযোজ্য হবে।
অন্যদিকে যদি আপনি একের অধিক ক্যাটাগরির তথ্য সংশোধন করতে চান তাহলে এক্ষেত্রে ৩৪৫ টাকা ফি প্রযোজ্য হবে।
ভোটার আইডি কার্ডের নিজের ইংরেজি নাম কিভাবে সংশোধন করব?
উত্তরঃ ভোটার আইডি কার্ডে আপনার যদি ইংরেজি নাম ভুল হয়ে থাকে তাহলে সে ক্ষেত্রে উপরোক্ত পদ্ধতিতে আপনি ভোটার আইডি কার্ডের ইংরেজি নামের বানান সংশোধন করে নিতে পারবেন।
শেষ কথা
ভোটার আইডি কার্ডের যেকোনো তথ্য সংশোধনের জন্য আজকের দেওয়া পদ্ধতিটি ফলো করলে আশা করি সঠিকভাবে ভোটার আইডি কার্ডের তথ্য সংশোধন করতে পারবেন।
ভোটার আইডি কার্ডের তথ্য সংশোধন করতে গিয়ে যদি কোন সমস্যায় পড়ে থাকেন তাহলে সেই সমস্যার সমাধান করতে আপনি আমাদেরকে কমেন্ট বক্সের মাধ্যমে জানিয়ে দিতে পারেন।
আমরা আমাদের সর্বোচ্চ দিয়ে আপনাকে সাহায্য করার জন্য চেষ্টা করব। ভোটার আইডি কার্ড সংক্রান্ত যেকোন তথ্য জন্য ভিজিট করুন Bangladeh NID Information.
এছাড়াও ভোটার আইডি কার্ড সংক্রান্ত যেকোনো সমস্যা সমাধানের জন্য আপনি আমাদের ওয়েবসাইটটি ভিজিট করতে পারেন। ধন্যবাদ আপনাকে।