ট্রেড লাইসেন্স করার নিয়ম সংক্রান্ত বিস্তারিত তথ্য জেনে নিন এখান থেকে। ব্যবসা শুরু করার জন্য সরকার কর্তৃক যে অনুমতি নেওয়া হয় সেটি হচ্ছে ট্রেড লাইসেন্স।
ট্রেড লাইসেন্স পাওয়ার জন্য স্থানীয় সরকার কর কর্মকর্তার অফিসে গিয়ে নির্দিষ্ট কিছু ডকুমেন্টস দিয়ে আবেদন করতে হয়। এগুলো করা হয়ে গেলে লাইসেন্স সুপারভাইজার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান তদন্ত করে সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে ট্রেড লাইসেন্স প্রদান করেন।
Trade License in Bangladesh
ইংরেজি Trade শব্দের অর্থ হচ্ছে বাণিজ্য এবং License শব্দের অর্থ হচ্ছে অনুমতি পত্র। সুতরাং ট্রেড লাইসেন্স শব্দের আক্ষরিক অর্থ হচ্ছে বাণিজ্যের জন্য অনুমতি পত্র। যেকোনো ব্যবসা করার ক্ষেত্রে ট্রেড লাইসেন্সের প্রয়োজন হয়।
ট্রেড লাইসেন্স এর মাধ্যমে সরকার কর্তৃক বাণিজ্য পরিচালনার অনুমতি প্রদান করা হয়। কোনো ব্যক্তি যে ব্যবসাটি করছেন সেটি বৈধ কিনা, এ ব্যবসাটি বৈধ সাব্যস্ত করতে হলে অবশ্যই ট্রেড লাইসেন্স করে নেওয়ার প্রয়োজন হয়।
ট্রেড লাইসেন্স না করলে পরবর্তীতে উক্ত ব্যবসা-বাণিজ্য অবৈধ ঘোষণা করা হয় এবং শাস্তি ও বিভিন্ন জরিমানার মুখোমুখি হতে হয়।
ট্রেড লাইসেন্স করার প্রয়োজনীয়তা
আপনি যদি একটি ব্যবসা শুরু করে থাকেন সেক্ষেত্রে আপনাকে অবশ্যই ট্রেড লাইসেন্স ইস্যু করে নিতে হবে। সাধারণত একটি ট্রেড লাইসেন্সের মাধ্যমে ব্যবসা-বাণিজ্য সম্পর্কে সকল বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করা হয়।
উক্ত ব্যবসা-বাণিজ্যের উপর যে কর প্রযোজ্য হয় সেই কর প্রদান করতে গেলে ট্রেড লাইসেন্স এর প্রয়োজন হয়। একটি ট্রেড লাইসেন্সের মাধ্যমে যে কোন ব্যবসা বাণিজ্যের উপর ঠিক কত টাকা কর প্রদান করতে হবে সেটি বিবেচনা করা হয়।
যদি ট্রেড লাইসেন্স না থাকে তাহলে ধরে নেওয়া হবে যে উক্ত ব্যক্তি সেই ব্যবসা-বাণিজ্যের জন্য কোন প্রকার কর প্রদান করেনি। সেই সাথে উক্ত ব্যবসাটি অবৈধ ঘোষণা করা হয়।
স্থানীয় সরকার সিটি কর্পোরেশন আইন অনুযায়ী কেউ যদি ট্রেড লাইসেন্স না করে ব্যবসা-বাণিজ্য পরিচালনা করে তাহলে তাকে প্রথমবারের জন্য 5000 টাকা জরিমানা প্রদান করতে হতে পারে এবং পরবর্তীতে প্রতিদিনের জন্য ৫০০ টাকা করে জরিমানা প্রদান করা লাগতে পারে।
এছাড়াও ট্রেড লাইসেন্স না থাকার কারণে ব্যক্তিকে বিভিন্ন ধরনের জরিমানা প্রদান করা হয় এবং মামলা দায়ের করা হয়। এসব কারণে ট্রেড লাইসেন্স অবশ্যই করে নেওয়া জরুরি যদি কেউ নতুন ব্যবসা বাণিজ্য শুরু করে থাকে।
আপনি যদি টিন সার্টিফিকেট রেজিস্ট্রেশন করতে চান, তাহলে ভিজিট করুন- টিন সার্টিফিকেট রেজিস্ট্রেশন
কোন ধরনের ব্যবসার জন্য ট্রেড লাইসেন্স প্রয়োজন: ট্রেড লাইসেন্স ব্যবসার ধরন
একটি কথা বলে নেওয়া প্রয়োজন যে সব ধরনের ব্যবসার জন্য ট্রেড লাইসেন্স প্রয়োজন হয় না। নির্দিষ্ট কিছু ব্যবসা রয়েছে যেগুলোর জন্য ট্রেড লাইসেন্স করে নেওয়া জরুরী। নিচে এগুলোর একটি লিস্ট প্রদান করা হলো।
- প্রোপ্রাইটরশিপ ব্যবসা
- পার্টনারশিপ ব্যবসা
- কোম্পানি
- ব্রাঞ্চ অফিস
- ক্লিনিক অথবা ব্যক্তিগত হাসপাতাল
- ছাপাখানা
- আবাসিক হোটেল
- রিক্রুটিং এজেন্সি
- অস্ত্র ও গোলাবারুদ
- ঔষধ ও মাদকদ্রব্য
- যে কোন ধরনের ফ্যাক্টরি
- আমদানি-রপ্তানি সরবরাহকারী ইত্যাদি
যদি কোন ব্যক্তি উপরের যেকোনো একটি ব্যবসা করে থাকে তাহলে তাকে অবশ্যই জরুরি ভিত্তিতে ট্রেড লাইসেন্স সংগ্রহ করতে হবে। তা না হলে এ সংক্রান্ত যে সকল সাজা এবং জরিমানা রয়েছে সেগুলোর মুখোমুখি হতে হবে।
এগুলো থেকে বাঁচতে হলে অবশ্যই ট্রেড লাইসেন্স ইস্যু করতে হবে।
ট্রেড লাইসেন্স কোথায় করতে হয়?
ট্রেড লাইসেন্স ইস্যু করা অনেক সহজ একটি বিষয়। ট্রেড লাইসেন্স করার জন্য আপনাকে আপনার স্থানীয় সরকারের অধীনে আবেদন করতে হবে।
প্রথমেই আপনাকে আইডেন্টিফাই করতে হবে যে আপনি যে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানটি পরিচালনা করছেন সেটি কোন স্থানীয় সরকারের অধীনে রয়েছে।
যেমন সিটি কর্পোরেশন, পৌরসভা, ইউনিয়ন পরিষদ। সেই স্থানীয় সরকার অফিসে গিয়ে আপনাকে ট্রেড লাইসেন্স আবেদনের জন্য তাদেরকে জানাতে হবে। এক্ষেত্রে তারা আপনার থেকে কিছু ডকুমেন্টস গ্রহণ করবে এবং আপনাকে একটি ফরম প্রদান করবে।
ফরম টি সঠিকভাবে পূরণ করে প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস এবং ফি প্রদান করতে হবে। নিচে এগুলো সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।
ই-ট্রেড লাইসেন্স করতে কি কি লাগে?
আপনি যদি ট্রেড লাইসেন্স করার জন্য প্রস্তুত হয়ে থাকেন তাহলে আপনাকে অবশ্যই আপনার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান অনুযায়ী কিছু ডকুমেন্ট সংগ্রহ করতে হবে। ডকুমেন্টগুলো ব্যবসা অনুযায়ী ভিন্ন ভিন্ন হয়ে থাকে।
চলুন আমরা দেখে নিই কোন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের জন্য কোন কোন ডকুমেন্টস প্রয়োজন হবে-
প্রোপ্রাইটরশিপ বা স্বত্বাধিকারী ব্যবসা অর্থাৎ সাধারণ ব্যবসার ক্ষেত্রে
আপনি যদি প্রোপ্রাইটরশিপ বা স্বত্বাধিকারী অর্থাৎ সাধারণ ব্যবসা শুরু করে থাকেন সেক্ষেত্রে আপনার যে সকল ডকুমেন্টগুলো প্রয়োজন হবে সেগুলো হচ্ছে-
- দোকান ভাড়ার চুক্তিপত্রের ফটোকপি
- নিজের দোকান হলে ইউটিনিটি বিল এবং যেকোনো ট্যাক্স পরিশোধের ফটোকপি
পার্টনারশিপ বা অংশীদারি ব্যবসার ক্ষেত্রে
আপনি যদি কারো সাথে পার্টনারশিপ বা অংশীদারি ব্যবসা করে থাকেন তাহলে ট্রেড লাইসেন্স করার জন্য আপনার নিচের ডকুমেন্টসগুলো প্রয়োজন হবে-
- দোকান ভাড়ার চুক্তিপত্রে সত্যায়িত ফটোকপি
- নিজের দোকান হলে যে কোন ট্যাক্স পরিশোধের ফটোকপি
- ৩০০ টাকার স্ট্যাম্পে পার্টনারশিপ ব্যবসার চুক্তিপত্র এবং তার ফটোকপি
- যেসব পার্টনার রয়েছে তাদের তিন কপি রঙিন ছবি এবং ভোটার আইডি কার্ড
কোম্পানির ক্ষেত্রে
আপনি যদি কোন কোম্পানি খুলে থাকেন তাহলে সেই কোম্পানির ক্ষেত্রে নিম্নলিখিত ডকুমেন্টসগুলো প্রয়োজন হবে-
- দোকান ভাড়ার চুক্তিপত্রের সত্যায়িত ফটোকপি বা নিজের দোকান হলে যে কোন ট্যাক্স পরিশোধের ফটোকপি
- আপনি যে কোম্পানির শুরু করতে যাচ্ছেন কোম্পানির সনদ এবং তার ফটোকপি
- মেমোরেন্ডাম ও আর্টিকেল অফ অ্যাসোসিয়েশন
- ম্যানেজিং ডিরেক্টর এর ৩ কপি রঙিন ছবি ও ভোটার আইডি কার্ডের ফটোকপি
ফ্যাক্টরি বা কারখানার ক্ষেত্রে
আপনি যদি কোন ফ্যাক্টরি বা কারখানা তৈরি করে থাকেন তাহলে সেই ফ্যাক্টরি বা কারখানার ট্রেড লাইসেন্স নেওয়ার জন্য আপনার নিম্নোক্ত ডকুমেন্টসগুলো প্রয়োজন হবে-
- ফ্যাক্টরিটি যদি পার্টনারশিপ হয়ে থাকে তাহলে পার্টনারশিপের চুক্তিপত্র
- কোম্পানির ডকুমেন্টস
- কোম্পানিটি যে পরিবেশে অবস্থিত সেই পরিবেশের ছাড়পত্রের একটি কপি
- ফ্যাক্টরি বা কারখানাটির বিস্তারিত বিবরণ সহ একটি নকশা লোকেশন সহ
- কারখানাটি যে জায়গায় অবস্থিত উক্ত জায়গার মালিকের অনুমতি পত্র
- ফায়ার সার্ভিসের ছাড়পত্র
- সকল প্রকার নিয়ম কানুন মেনে চলার অঙ্গীকারনামা ৩০০ টাকার স্ট্যাম্পে স্বাক্ষরিত কপি
শিল্প প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে
আপনি যদি কোন শিল্প প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করে থাকেন তাহলে তার জন্য ট্রেড লাইসেন্স নিতে হলে নিম্ন ডকুমেন্টস গুলো প্রয়োজন হবে-
- যদি পার্টনারশিপ প্রতিষ্ঠান হয়ে থাকে তাহলে অবশ্যই পার্টনারশিপের চুক্তিপত্র
- পরিবেশ সংক্রান্ত অনুমতি পত্র
- প্রতিষ্ঠানের লোকেশন চিহ্নিত একটি নকশা
- ফায়ার সার্ভিসের প্রত্যয়ন পত্র
- ডিসির নিয়মাবলী মেনে চলার জন্য ১৫০ টাকার স্ট্যাম্পে স্বাক্ষরিত অঙ্গীকারনামা
অন্যান্য ব্যবসার ক্ষেত্রে
উপরোক্ত ব্যবসা গুলো ছাড়াও আর যে সকল ব্যবসা রয়েছে সেগুলোর ট্রেড লাইসেন্স নিতে হলে কোন কোন ডকুমেন্টস লাগবে সেগুলো পয়েন্ট আকারে দেওয়া হলো-
- ক্লিনিক অথবা ব্যক্তিগত হাসপাতালের ক্ষেত্রে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের অনুমতি পত্র
- ছাপাখানা ও আবাসিক হোটেলের ক্ষেত্রে ডেপুটি কমিশনারের অনুমতি
- রিক্রুটিং এজেন্সির ক্ষেত্রে মানবসম্পদ রপ্তানি ব্যুরো কর্তৃক প্রদত্ত অনুমতিপত্র
- অস্ত্র ও গোলাবাড়িদের ক্ষেত্রে অস্ত্রের লাইসেন্স
- ঔষধ ও মাদকদ্রব্যের ক্ষেত্রে ড্রাগ লাইসেন্স এর ক্ষেত্রে সিভিল অ্যাসোসিয়েশন কর্তৃপক্ষের অনুমতি
ট্রেড লাইসেন্স করার নিয়ম: E Trade License Application
এখন চলুন আমরা মূল আলোচনায় চলে যাই সেটি হচ্ছে কিভাবে আপনি আপনার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের জন্য ট্রেড লাইসেন্স ইস্যু করবেন। চলুন নিচে ধাপে ধাপে সেগুলো জেনে নেওয়া যাক-
প্রথম ধাপঃ অফিসে যাওয়া
- ট্রেড লাইসেন্স সংগ্রহ করার প্রথম ধাপে আপনাকে উপযুক্ত অফিস খুঁজে বের করতে হবে অর্থাৎ আপনার ব্যবসাটি কোন স্থানীয় সরকারের অধীনে সেটি আইডেন্টিফাই করে সেই স্থানীয় সরকারের অফিসে আপনাকে যেতে হবে।
দ্বিতীয় ধাপঃ ফরম সংগ্রহ করা
- অফিসে গিয়ে আপনাকে একটি ফর্ম সংগ্রহ করতে হবে। ট্রেড লাইসেন্স করার জন্য মূলত দুইটি ফর্ম রয়েছে। একটি হচ্ছে আই ফরম এবং আরেকটি হচ্ছে কে ফরম।
- আপনার ব্যবসাটি যদি ছোটখাটো হয়ে থাকে তাহলে I ফরমটি সংগ্রহ করতে হবে।
- আর যদি আপনার ব্যবসাটির বড় পরিসরে হয়ে থাকে তাহলে K ফরম সংগ্রহ করতে হবে। উল্লেখ্য প্রতিটি ফরমের দাম 50 টাকা।
তৃতীয় ধাপঃ ফরম পূরণ করা
- ফর্মটি সংগ্রহ করার পর ফরমটি সঠিক তথ্য দিয়ে আপনাকে পূরণ করতে হবে।
- আপনার এনআইডি কার্ড এবং অন্যান্য ডকুমেন্টগুলো দেখে খুব ভালোভাবে ফরমটি পূরণ করুন।
- লক্ষ্য রাখবেন এই ফর্মে যেন কোন প্রকার ভুল না হয়। যদি কোন প্রকার ভুল হয় তাহলে কর প্রদান করার ক্ষেত্রে আপনার সমস্যা হতে পারে।
- এজন্য খুব ভালোভাবে ফরম টি সঠিক তথ্য দিয়ে পূরণ করুন।
চতুর্থ ধাপঃ ডকুমেন্টসহ ফরম জমা দেওয়া
- ফরম পূরণ করা হয়ে গেলে প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টসহ এই ফর্মটি আপনাকে সংশ্লিষ্ট ডেস্কে জমা দিতে হবে।
- আপনার ট্রেড লাইসেন্স করার জন্য ব্যবসা ভেদে বিভিন্ন রকমের ডকুমেন্টস প্রয়োজন হবে।
- উপরে সেগুলো উল্লেখ করা হয়েছে। সুতরাং আপনার ব্যবসার প্রতিষ্ঠান অনুযায়ী যে সব ডকুমেন্টস প্রয়োজন হবে সে সকল ডকুমেন্টগুলো সহ আপনার পূরণকৃত ফরমটি জমা দিন।
পঞ্চম ধাপঃ ফি প্রদান করা
- পঞ্চম ধাপে এসে আপনাকে ট্রেড লাইসেন্স করার জন্য ফি প্রদান করতে হবে।
- এক্ষেত্রে তারা আপনাকে যে নির্দেশনা দিবে সে নির্দেশনা ফলো করতে হবে। তারা যদি সরাসরি ফি গ্রহণ করে তাহলে তাদেরকে দিয়ে দিন।
- আর যদি তারা ব্যাংক ড্রাফটের মাধ্যমে ফি প্রদান করতে বলে তাহলে আপনাকে নির্দিষ্ট ব্যাংকে গিয়ে ফি প্রদান করতে হবে।
- তবে মনে রাখবেন ব্যাংকে গিয়ে ফি প্রদান করে অবশ্যই রশিদ টি সংগ্রহ করবেন।
ষষ্ঠ ধাপঃ ট্রেড লাইসেন্স গ্রহণ
- উপরের ধাপ গুলো করা হয়ে গেলে আপনার ট্রেড লাইসেন্স আবেদন সম্পন্ন হবে।
- এগুলো করা হয়ে গেলে আপনাকে ট্রেড লাইসেন্স ইস্যু করার জন্য অপেক্ষা করতে হবে।
- আবেদন করার পর ট্রেড লাইসেন্স অফিস থেকে আপনার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানটি তদন্ত করা হবে এবং সবকিছু ঠিক থাকলে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে আপনাকে ট্রেড লাইসেন্স প্রদান করা হবে।
ট্রেড লাইসেন্স পাওয়ার পর সেটি আপনি চেক করতে পারবেন। ট্রেড লাইসেন্স চেক বা প্রিন্ট করার জন্য ভিজিট করুন- Trade License Download
ট্রেড লাইসেন্স ফি: ট্রেড লাইসেন্স করতে কত টাকা লাগে?
ট্রেড লাইসেন্স করতে কত টাকা লাগে সেটি এক কথায় বলা সম্ভব নয় কারণ ট্রেড লাইসেন্স এর ফি ব্যবসা এবং স্থান ভেবে ভিন্ন ভিন্ন হয়ে থাকে। ব্যবসাটি যদি কোন সিটি কর্পোরেশনের অধীনে হয় তাহলে এক্ষেত্রে ফি বেশি হয়ে থাকে।
আর যদি গ্রামাঞ্চলে হয়ে থাকে তাহলে ফি অপেক্ষাকৃত কম হয়ে থাকে। ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে ট্রেড লাইসেন্স সংগ্রহ করতে সাধারণত ৫০০ থেকে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত খরচ করতে হয়।
ট্রেড লাইসেন্স এর খরচ সাধারণত ব্যবসায়ের পরিসরের উপর নির্ভর করে।
অনলাইনে ট্রেড লাইসেন্স করার নিয়ম: দোকানের ট্রেড লাইসেন্স করার নিয়ম
যারা অনলাইনে ট্রেড লাইসেন্স করতে চাচ্ছেন তাদের জন্য বলতে হচ্ছে অনলাইনে ট্রেড লাইসেন্স করা সম্ভব নয় কারণ অনলাইনে ট্রেড লাইসেন্স করার কোন সুযোগ এখন পর্যন্ত করা হয়নি।
- দোকানের ট্রেড লাইসেন্স করার জন্য স্থানীয় অবস্থান অনুযায়ী স্থানীয় কর কর্মকর্তার অধীনে গিয়ে ট্রেড লাইসেন্স করতে হয়।
- তবে আপনি অনলাইনে ট্রেড লাইসেন্স সংক্রান্ত বিভিন্ন সেবা নিতে পারবেন। এর জন্য ভিজিট করুন- E-Trade License
- এই ওয়েবসাইটে একটি একাউন্ট তৈরী করে নিতে হবে। এরপর লগইন করে বিভিন্ন সেবা নিতে পারবেন।
- আপনি যদি সিটি কর্পোরেশন, পৌরসভা অথবা ইউনিয়ন পরিষদের অধীনে হয়ে থাকেন তাহলে সেই স্থানীয় সরকারের অফিসে গিয়ে আপনাকে ট্রেড লাইসেন্স করার জন্য তাদেরকে জানাতে হবে এবং উপরিউক্ত নিয়ম অনুযায়ী ট্রেড লাইসেন্স করতে হবে।
ট্রেড লাইসেন্স নবায়ন করার নিয়ম: Renewal of Trade License
একটি ট্রেড লাইসেন্স নিলে সেটা সারা জীবনের জন্য ব্যবহার করা যাবে না। নির্দিষ্ট সময় পরপর সেুট নবায়ন করে নিতে হবে। একটি ট্রেড লাইসেন্সের মেয়াদ সাধারণত এক বছরের মত হয়ে থাকে। প্রতিবছর জুলাই মাসে ট্রেড লাইসেন্স নবায়ন করে নিতে হয়।
আপনি যদি ট্রেড লাইসেন্স নবায়ন না করেন তাহলে ট্রেড লাইসেন্স না থাকলে যেরকম শাস্তি এবং জরিমানার মুখোমুখি হতে হয়, সেরকমই শাস্তি এবং জরিমানার মুখোমুখি হতে হবে। এজন্য প্রতিবছর জুলাই মাসে ট্রেড লাইসেন্স সময়ের মধ্যে নবায়ন করে নিতে হবে।
ট্রেড লাইসেন্স করার জন্য আপনি যে অফিস থেকে ইস্যু করেছিলেন সেই অফিসে আপনাকে যেতে হবে। সেখানে গিয়ে ট্রেড লাইসেন্স নবায়ন সম্পর্কে তাদেরকে জানাতে হবে। এক্ষেত্রে ব্যাংক ড্রাফটের মাধ্যমে ফি প্রদান করতে হবে।
ট্রেড লাইসেন্স করতে যে টাকা প্রয়োজন হয় ট্রেড লাইসেন্স নবায়ন করার ক্ষেত্রেও একই টাকাই প্রযোজ্য হবে।
শেষ কথা
আপনি যদি নতুন ব্যবসা শুরু করে থাকেন তাহলে আপনার জন্য শুভকামনা। তবে সরকার কর্তৃক ব্যবসাটির অনুমতি পাওয়ার জন্য অবশ্যই জরুরি ভিত্তিতে ট্রেড লাইসেন্স করে নিন।
ট্রেড লাইসেন্স এর মেয়াদ শেষ হয়ে গেলে সেটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে অবশ্যই নবায়ন করে নিতে হবে।
ট্রেড লাইসেন্স সংক্রান্ত যদি আপনার কোন প্রশ্ন থেকে থাকে তাহলে সেটি কমেন্ট বক্সে যোগ করতে পারেন। আমরা আপনাকে তথ্য দিয়ে সাহায্য করার জন্য চেষ্টা করব। ধন্যবাদ।